রেক্টর বিল্ডিংএর অফিসের সামনে নোটিস বোর্ড গুলোর দিকে তাকালাম | কোনো নোটিস নেই | এখন বোধ হয় সব নোটিস ইন্টারনেটে পাওয়া যায় | মনে আছে কতবার এই নোটিস বোর্ডের সামনে দাড়িয়েছি | পুরানো প্রিয় বন্ধুদের মুখ ভেসে উঠলো | হাসতে হাসতে গল্প করতে থাকা নিজের মুখটাকে খোজার চেষ্টা করলাম কল্পনার ভিড়ে | অস্পষ্ট দেখলামও নিজেকে | সিড়ি দিয়ে কাফেটারিয়ার দিকে হাটা শুরু করলাম | বৃষ্টি নেমে ঘাস গুলি আরো সবুজ হয়ে গেছে | গাছের পাতা গুলি আরো তাজা হয়ে আছে | আমার মনে হলো ঘাসগুলি আমাকে দেখছে, দেখছে আমার অন্তরটা | বৃষ্টির মত চোখ দিয়ে পানি চলে এলো, বুকের ভিতর অনেক মেঘ জমে আছে | জমে থাকা মেঘ গুলি একটার সাথে আরেকটা ধাক্কা লাগছে যেন | সিড়ি দিয়ে নামতে থাকা এক পথিককে দেখে ব্যাগ থেকে সানগ্লাসটা বের করলাম | পথিক সিড়ি দিয়ে নেমে গেলে আমি একটু দাড়ালাম | সিড়ি দিয়ে উঠে হাতের বা দিকে ক্যাফেটারিয়া আর হাতের ডান দিকে একটা খোলা জায়গা | বসন্ত কাল আসলে রোদ পোহাতে আসে এখানে ছাত্র ছাত্রীরা | সকাল থেকে চলে আড্ডা | আজকে বন্ধ তাই কেউ নেই | কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি ১০-১২ বছর আগে বসে থাকা কপোত কপোতী একে অপরকে জড়িয়ে ধরে গভীর চুমু খাচ্ছে | আমাদের এই ইউনিভার্সিটি তে এটা ছিল খুব দেখার মত দৃশ্য | এরকম আদর করার দৃশ্য দেখলে আমি তাকিয়ে থাকতাম | চোখ সরাতাম না | কখনই আমার কাছে অশ্লীল মনে হত না এই দৃশ্য | আমি আজকেও মনে মনে খুজলাম সেরকম অচেনা কপোত কপোতী এবং দেখলামও কল্পনায় | দেখলাম একটা ২১ বছর বয়সী মেয়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে একটা ২১ বছর বয়সী ছেলে আর তার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে মেয়েটা |
ঘুরে হাটা শুরু করলাম উল্টা দিকে | যাওয়ার পথে ডান দিকে পড়ল আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্ট | ডিপার্টমেন্টএর সামনে দাড়িয়ে মনে পড়ল রাশেদ ভাইয়ের কথা | ছাত্রজীবনে লাঞ্চের ব্রেক দিলেই এখানে আড্ডা জমত আমাদের | কখনো রাশেদ ভাই থাকত, কখনো থাকত মামুন ভাই | মনে আছে মাঝে মাঝে আসত পাপ্পু ভাইয়ের বন্ধু সিনান | চা খেতে খেতে গল্প করতাম কত | মনে আছে একদিন লাঞ্চ ব্রেকে বের হয়েছি ক্যাফেটারিয়ার দিকে যাব | তখন পথে দেখা হলো পাপ্পু ভাইয়ের বন্ধু সিনান আর ফাতিহর সাথে | ফাতিহর মুখ ভরা ছিল গোফ দাড়ি | আমাদের চেয়ে বয়স বেশী ছিল কিন্তু দারুন রসবোধ ছিল তার | একদিন আ
এই ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতি মনে নিয়ে যখন আমি ফিজিক্স ডিপার্টমেন্ট এর সামনে আসলাম তখন মনে পরে গেল আমার পেইন্টিং ক্লাসের কথা | আমি দুই সেমিস্টারে দুইটা পেইন্টিং কোর্স নিয়েছিলাম | আমাদের ক্লাস হত ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টএর নিচে বেসমেন্টএ | মনে পড়ল আমি যখন পেইন্টিং ক্লাস নিতাম তখন আমার বন্ধু আইচা নিত স্কাল্পচার ক্লাস | ক্লাস করতে করতে আইচার সাথে স্কাল্পচার টিচারের প্রেম হয়ে গেল | আর এদিকে আমি আইচার নতুন বয়ফ্রেন্ড কে দেখে মুচকি মুচকি হাসতাম | মনে পড়ল আমাদের নুড স্টাডির দিন গুলি | কি ভিশন শীতের মধ্যে উলঙ্গ হয়ে একটা পুরুষ মডেল দাড়িয়ে থাকত, আর আমরা ছবি আকতাম | মনে পরে গেল আর্ট টিচারের কথা | ঘুরে ঘুরে উনি বার বার আমার ছবির সামনে আসতেন, খুব পছন্দ করতেন আমাকে | দুইটা কোর্সেই আমি এ পেয়েছিলাম | ফিজিক্সের পাশে ম্যাথ ডিপার্টমেন্ট দেখে মনে পরে গেল আমি একবার ম্যাথে ফেইল করেছিলাম | প্রথম বছর লিনিয়ার আলজেবরা নিয়ে আগা মাথা কিছুই বুঝি নাই | পরে দিতিযবার যখন নিয়েছি তখন ফাইনাল পরীক্ষায় একটা প্রশ্ন ছিল, যেটা কেউ পারেনি | পরে আমার শিক্ষক আমাকে ডেকে বলেছিলেন "তুমিই ক্লাসের এক মাত্র মেয়ে যে এই একটা প্রবলেম সলভ করতে পেরেছ |" আমার জীবনের একটু একটু আত্মবিশ্বাস অর্জন হয়েছে এই ইউনিভার্সিটি তে | আমি তখন মনে মনে ভাবছিলাম "ভাগ্গিস আমি ফেইল করেছিলাম নাহলে আজকের আমার মধ্যে কোনদিন এই আত্মবিশ্বাস তৈরী হত না |"
এই ইউনিভার্সিটি আমাকে কত কিছু দিয়েছে | কতকিছু শিখিয়েছে | লাইব্রেরির সামনে দাড়িয়ে মনে পড়ল এরকম বসন্তের একটি দিনে আমি প্রথম আবিষ্কার করেছিলাম আমার নামের মানে | যখন একজন আফ্রিকান আরবী ভাষা জানা যুবকের মুখে আমার নামের অর্থ নতুন ভাবে আবিষ্কার করি তখন আমি অবাক হয়েছিলাম| বসন্ত কালে আমাদের ইউনিভার্সিটিতে বসন্ত উত্সব হয় | টার্কিশ ভাষায় বলে "বাহার সেনলিয়ি"| মনে আছে আমি বাংলাদেশের স্টল দিতাম প্রতি বছর | ছাত্র হিসাবে এই স্টল থেকে কিছু ইনকাম ও হত | দেশে থেকে অনেক টুকিটাকি জিনিস এনে দুইদিনের এই উত্সবে বিক্রি করতাম | আমাদের স্টলের পাশেই ছিল একটা আফ্রিকান স্টল | ঐখানে আফ্রিকানরা সারাদিন জোরে জোরে rap বাজিয়ে নাচানাচি করত | কখনো কখনো ওদের সাথে আমরাও নাচতাম | বাংলাদেশী স্টলে সারাদিন দাড়িয়ে থাকার কারণে সব আফ্রিকানরা আমাদের বন্ধু হয়ে যেত | একদিন একটা আফ্রিকান ছেলে এসে আমার নাম জিগ্গেস করলে আমি জবাব দিলাম "মোশাহিদা সুলতানা" | ছেলেটা আমার নাম শুনে বলে "এটা তো আরবী শব্দ, তুমি কে এটার মানে জান?" আমি বললাম "না" | সে তখন আমাকে বলল "It means the queen who can foresee " | আমি তো নামের মানে শুনে অবাক | আমি জানি মোশাহিদা মানে যে অবলোকন করে বা observe করে| আর সুলতানা মানে রানী | কিন্তু এই যুবকটি যখন দুইটা মিলিয়ে আমার নামের অর্থ দাড় করলো আমি তার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম |
লাইব্রেরির সামনে একটা বেঞ্চে বসে অনেকক্ষণ ভাবলাম পুরানো দিনের কথা | চোখে সানগ্লাসটা ছিলই | পাথর বিছানো রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিল ছাত্র ছাত্রীরা | আজকে ছুটির দিন | একেক জায়গায় একেকধরনের ক্লাস হচ্ছে, কোথাও গান শেখার, কোথাও নাচ শেখার, কোথাও নাটক, কোথাও বাদ্যযন্ত্র | মনে পড়ল আমার বন্ধু সেলিসের সাথে দেখা করার কথা | সেলিস হাজিতেপে ইউনিভার্সিটিতে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টএর শিক্ষক | সেলিস আমার এই ইউনিভার্সিটির বন্ধু না | সে আমার বস্টনের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বন্ধু | সেলিস সারা বছর আংকারা তে শিক্ষকতা করে আর গ্রীষ্মের ছুটিতে হার্ভার্ডে পোস্ট ডক রিসার্চ করে | সেলিসকে আমি পছন্দ করি শুধু সে আমার বন্ধু বলে নয় সেলিসের মধ্যে কয়েকটি বিষয় আমি আবিষ্কার করেছি যা আমাকে তার প্রতি প্রবল আকর্ষণ করে | সেটা হলো এত ব্যস্ত জীবনের মধ্যেও সেলিস সঙ্গীত চর্চা থামায়নি | গতকাল ওর সাথে আমার কথা হয়েছে | সেলিস আজকে ইউনিভার্সিটিতে, মিউজিক ক্লাসে এসেছে | তার ক্লাস শেষ হলে আমাদের এক সাথে খাওয়ার কথা | আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে উঠলাম |
সেলিসকে আমার সহযোদ্ধা মনে হয় কয়েকটি কারণে | তুরস্কের অনেক গুলি সৌন্দর্যের মধ্যে সেলিস একটি | আমরা যখন নর্থইস্টার্নএ ছিলাম আমার মনে আছে আমি আমার কয়েকজন টার্কিশ বন্ধুকে ইলেকশনে দাড়াতে উদ্বুদ্ধ করি | আমাদের একটা গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টদের জন্য একটি সংগঠন ছিল | গ্রাজুয়েট এন্ড প্রফেসনাল স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন | প্রতি বছর ছাত্রদের কাছ থেকে একটা বড় অংকের টাকা নেয়া হত ছাত্রদের কার্যক্রম অর্থায়ন করার জন্য | আমরা যখন ইলেকশনে দাড়াই তখন ওই এসোসিয়েশনের ফান্ডে ছিল প্রায় নব্বই হাজার ডলার | অথচ বছর ব্যাপী যেই কাজ হত তার বেশির ভাগ চলে যেত বিজনেস ফেকালটির নানান প্রোগ্রামে | একজিকিউটিভ কমিটিতে ৬ জনের মধ্যে ৫ জনই দেখা যেত বিজনেস ফেকালটির | প্রতিবছর যখন এই ঘটনা ঘটছিল তখন আমার মনে হলো আমাদের মত ছাত্র ছাত্রীদের এই কমিটি তে থাকা প্রয়োজন | এবং কোথা থেকে দেখি সেলিসের ও আবির্ভাব | এবং সেও মনে করে আমাদের ইলেকশনে দাড়ানো দরকার | আমি এবং সেলিস দুইজনই সেই বছর সাফল্যের সাথে নির্বাচিত হলাম | যখন আমাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল তখন আমার মনে আছে আমি মনে মনে হাসছিলাম | আজকে সেই সেলিসের সাথে আবার দেখা হবে ভেবে মনটা আনন্দে নেচে উঠলো | একই ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করলেও সেলিস কে বস্টনে যাবার আগে আমি কখনো দেখি নাই | কিন্তু আজকে আমাদের দেখা হচ্ছে এরকম একটা জায়গায় যেখানে আমাদের কখনো দেখা হয়নি |
হাটতে হাটতে আমি চলে গেলাম তুর্কিশ ফোক মিউজিক ক্লাবের বিল্ডিং এ | বিল্ডিং এর কাছে যেতেই আমার মনে বসন্ত অনুভব শুরু হলো | বাশির সাথে দূর থেকে ভেসে আসা ঢোলের শব্দে মোহিত হয়ে গেলাম | আর মনে মনে উত্তেজনা পুরানো সহযোদ্ধা সেলিস কে দেখব | যখন দেখলাম রুমের ভিতর প্রেকটিস চলছে আমি রুমের বাইরে বসে সেলিসকে মোবাইল থেকে মেসেজ পাঠালাম | বসে বসে মগ্ন হয়ে বাঁশী শুনছি | মনে পড়ল বস্টনে যখন ছিলাম তখন আমি আর সেলিস মিলে একটা তুর্কিশ ক্লাসিকাল মিউজিক সন্ধ্যার আয়োজন করেছিলাম | একটা বড় হল রুম নিয়ে সেখানে ৩০ সদস্যের একটা দল যন্ত্র সংগীত পরিবেশন করেছিল | সেলিস সেখানে বাজিয়েছিল | কিন্তু আমাদের প্রোগ্রামে একটা ঝামেলা হয়েছিল | আমাদের ফিনান্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিল এক আমেরিকান মেয়ে | সে আমাদের তুর্কিশ মিউজিকের আয়োজন পছন্দ করছিল না | কারণ তারা আগ্রহী ছিল বিজনেস ফেকাল্টি ভিত্তিক রিভার ক্রুজ, নাচের পার্টি আয়োজন করতে | যখন দেখছিল সেলিস আর আমি পুরানো রেওয়াজ ভেঙ্গে নতুন ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজন করছি তখন সেই মেয়েটি একটা চালাকি করেছিল | গানের দলের জন্য একটা সৌজন্য উপহার বাবদ মাত্র ৫০০ ডলার বাজেটে দেয়া হয়েছিল | সেই মেয়েটি সেটা এডভাইজারকে দিয়ে এপ্রুভ করায়নি | প্রোগ্রামের শেষের দিকে দেখি সেলিসের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে | এত সুন্দর একটা মানুষ, এত সুন্দর গান যে গায় তার মুখ ফ্যাকাশে দেখে আমার মন খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল | আমি একটু ও অপেক্ষা না করে একটা বাক্স যোগার করলাম অফিস থেকে, সেটার গায়ে কাগজ দিয়ে মুরে একটা ফুটা করে রিসেপশনে টেবিলের সামনে রেখে দিলাম | দাড়িয়ে থাকলাম বাক্সের সামনে | সেলিস এসে আমাকে জিগ্গেস করে "এটা কি?" আমি বললাম "ধরে নাও দান বাক্স | শ্রোতারা গান শুনে ফেরার পথে খুশি হয়ে যদি পরবর্তী প্রোগ্রাম আয়োজনের জন্য কিছু অর্থ সাহায্য দিতে চায় তাদের জন্য এই বাক্স |" সেলিস আমার কান্ড দেখে হেসে ফেলল| পরে সবাই চলে গেলে সেলিস আর আমি বাক্স খুলে দেখি প্রায় ৪০০ ডলারের মত উঠেছে | ওই টাকাটা পরে আমরা বাদকদের দেই | সেদিন আমাদের দুইজনের এই মিলিত উদ্যোগে করা আয়োজন এবং টাকা সংগ্রহের পর থেকে সেলিস এবং আমি মনে মনে সহযোদ্ধা হয়ে গেলাম | সেদিন জেনেছিলাম আমেরিকানরা টাকা না দিলেও টাকা আমরা যোগার করতে পারি | মন থেকে কিছু করলে কোনো কাজ টাকার জন্য আটকে থাকে না | আর তুর্কিশ মিউজিক তো আরই না |
ক্লাস শেষ হতে হতে প্রায় সারে তিনটা বেজে গেছে | স্মৃতিচারণ করতে করতে পেটের ভিতর কখন খিদা পেয়েছে টের পাইনি | সেলিস তার লাল জ্যাকেট পরে লাল রঙের গাড়িতে উঠলো | আমি ওর পিছে পিছে উঠলাম | সেলিসের লাল প্রীতি দেখে আমার নিজের লাল প্রীতির কথা মনে হলো | ভাবলাম দুইটা গভীর আবেগী মানুষ লাল প্রীতি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় পৃথিবীর দুই প্রান্তে | সেলিস গাড়ি নিয়ে আসল ইউনিভাসিটির ভিতর চার্শিতে | চার্শি হচ্ছে মার্কেট | সেখানে একটা খাওয়ার দোকান আছে | ছাত্র অবস্থায় হাতে অনেক টাকা ছিল না বলে এখানে কখনই খেতে আসা হত না | মাঝে মাঝে জানালা দিয়ে দেখতাম কি কি পাওয়া যায় | তবে মনে আছে একদিন আমার জন্মদিনে আমার মা আমাকে ফোন করে বলেছিল মার কথা মনে করে কেক খেতে | আমি একদিন এখানে এসে একা একা বসে এক পিস কেক খেয়েছিলাম আর মায়ের কথা মনে করেছিলাম | আজকে মেনু দেখে সেই দৃশ্যটা আবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো | আমি আর সেলিস মিলে সালাদ আর চিচ্কেন অর্ডার দিলাম তারপর দুইটা ডিশ দুইজনে ভাগাভাগি করে খেলাম | তারপর আরো দুই ঘন্টা বসে রইলাম টেবিলে | আরো ৩ কাপ চা খেলাম |
৫:৩০ এর দিকে সেলিসের এক বন্ধু আসল | সেলিস এবং এই বন্ধুটি এক সাথে লাইফ গার্ড গ্রুপে কাজ করত | স্থলে ও পানিতে বিপদে পরা মানুষদের লাইফ সাপোর্ট দেয়ার জন্য এই গ্রুপ এক শহর থেকে আরেক শহরে ঘুরে বেড়াত | সেলিস ছিল সেই দামাল মেয়েদের একজন | আমরা এক সাথে গল্প করে শেষে ঠিক করলাম আমি কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াব এখানে | এই ফাকে সেলিস তার মা আর তার মায়ের বান্ধবীকে বাসা থেকে নিয়ে আসবে | আটটার দিকে একটা ফোক মিউজিকের কনসার্ট আছে, আমরা সেখানে যাব | সেলিস ছয়টার সময় চলে গেল গাড়ি নিয়ে | আমাকে দিয়ে গেল একটা কাগজ আর একটা কলম | সেলিস জানে আমি লেখালেখি করি | সে আমাকে বলল এই কাগজ কলম দিলাম, বসে বসে লিখ | আমি হাসলাম | আর দিয়ে গেল ওর লাল জ্যাকেট | কারণ সারাদিন বৃষ্টিতে একটু ঠান্ডা পড়েছে |
সেলিস চলে গেলে আ
সক থেকে বের হয়ে হেটে হেটে ইউনিভার্সিটির
রবিবারের বাজারে পাশ দিয়ে হেটে যেয়ে আমি চলে গেলাম ফেবে অন বেশ
ঢালু পথ দিয়ে যখন নীচে নামছি তখন মনে হলো আমার ডর্মের কাছ দিয়ে না গেলে এই যাত্রা টা অসম্পূর্ণ
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৮ টা বাজতে আর দশ মিনিট আছে | সেলিস ফোন করে জিগ্গেস করলো আমি কোথায় | আমি বললাম দশ মিনিটের মধ্যেই আসছি | বলেই জিমনাসিয়ামের পাশ দিয়ে শর্ট কাট রাস্তাটা ধরে হাটা শুরু করলাম | জিন্সের প্যান্টের নীচের অংশটা ভিজে একদম চুপচুপে | মেজুনলার কনগ্রেস মার্কেজিতে ঢুকলাম | আমাদের সময় এই সেন্টারটা কেবল উদ্বোধন হয়ে কয়েকটা অনুষ্ঠান হয়েছিল | এর ভিতরে খুব বেশী আসা হইনি | ভিতরে যেয়ে দেখি বড় অডিটরিয়ামের সামনে ভীর | মানুষ দাড়িয়ে আছে | আমাকে দূর থেকে দেখে সেলিস ছুটে এলো | আমার হাতে ধরিয়ে দিল একটা টিকেট | আমি বললাম এই ৫ লিরার টিকেট কিনা তো আমার উচিত ছিল | তুমি দিলে কেন? সেলিস বলে "মোশাহিদা, তুমি চুপ কর, যেভাবে বলি সেভাবে ঢুকে পর |" সেলিসের পিছনে পিছনে আমি ঢুকলাম | দেখি বিশাল মঞ্চ জুড়ে প্রায় ত্রিশ জনের বেশী পারফরমার বাদ্য যন্ত্র ও মাইক নিয়ে রেডি | সেলিসের মায়ের সাথে পরিচিত হলাম তার একটু পর শুরু হলা প্রোগ্রাম |
প্রথম অংশটা শুধু বাদ্যযন্ত্র | লাল, কালো আর সাদা রঙের কাপড় পড়ে বিভিন্ন বয়সী ছেলে মেয়ে, মাঝবয়সী নারী পুরুষ, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা লাইন ধরে দাড়িয়ে আছে | বাঁশী, ঢোল, সাচ, ভায়োলিন, ব্যবহার করে
বসন্ত গুলি অপূর্ণ বলে এখনো এত সুন্দর | কতবার এই অপূর্ণতা ক্লান্ত করেছে | কতবার বসন্তের এই অপূর্ণতা আবার জাগিয়েও তুলেছে দেহ মন | মনে হলো আজকের কনসার্টটা যেন আমার জন্যেই করা | কারণ আজকের কনসার্টের নাম "ömrümüzün baharı"| এর মানে হলো "আমাদের জীবনের বসন্ত " |
সেলিস যেই গান টি গাইছে :
Aşkın odu ciğerimi
Yaka geldi, yaka gider
Garip başım bu sevdayı
Çeke geldi, çeke gider
Tak etti firak canıma
Aşık oldum cananıma
Aşk zincirin dost boynuma
Taka geldi, taka gider
Yaka geldi, yaka gider
Garip başım bu sevdayı
Çeke geldi, çeke gider
Tak etti firak canıma
Aşık oldum cananıma
Aşk zincirin dost boynuma
Taka geldi, taka gider
flowing words...i am just filled with strange tranquility.....moments of serenity .....magical effect......
ReplyDelete......and a decisive determination
ReplyDeleteআমি টার্কিশ ভাষা শিখতেছি ... এবং আমার গার্ল ফ্রেন্ড টার্কিশ ... আমি কি আপনার কাছ থেকে কিছু সাহায্য পেতে পারি ??? আমার ইমেইল srabon@ovi.com
ReplyDeletefacebook.com/srabonbangali
twitter : @srabonHasan
দয়া করে একটু যদি জানাতেন ... আমার শুধু ওখানে পড়তে যাওয়া আর কিছু সমস্যার সমাধান জানতে চাইতাম
Nice Article sir, Keep Going on... I am really impressed by read this. Thanks for sharing with us. Bangladesh National Flag Pictures.
ReplyDelete